স্বদেশ ডেস্ক
প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির কথা স্বীকার করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম জানিয়েছে, হাজার হাজার মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছয়জন মারা গেছে। এদের মধ্যে একজন করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন।
এছাড়াও দেশটিতে এক লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষ জ্বরে ভুগছে, যাদের আলাদাভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
যদিও উত্তর কোরিয়া এই প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে মৃত্যুর খবর দিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সেখানে আগে থেকেই করোনার সংক্রমণের অস্তিত্ব ছিল।
উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, এবং সেখানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, কতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে যে, ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবটি রাজধানীর বাইরেও ছড়িয়েছে।
টিকা নয়, সীমান্ত বন্ধ করে করোনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা
তবে করোনার ভ্যাকসিন কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছে উত্তর কোরিয়া। বিভিন্ন দেশ যখন তাদের ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে চেয়েছিল, তখন সেটি গ্রহণ করেনি দেশটি। এর পরিবর্তে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করেছে উত্তর কোরিয়া। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশটিতে অনেক আগে থেকেই করোনা সংক্রমণ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা কর্মসূচি গ্রহণ না করায় দেশটির দুই কোটি ৫০ লাখ মানুষ ঝুঁকিতে আছে।
গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়াকে টিকা সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেসব প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
উত্তর কোরিয়া বলছে, দেশটির নেতা কিম জং উন করোনা সংক্রমণ নির্মূলে বদ্ধপরিকর। তিনি এটিকে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপের লক্ষে যে বৈঠক ডাকা হয়েছে, সেখানে কিম জং উনকে মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে। এই প্রথমবারের মতো তাকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেল।
তবে বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিরা যখন তাদের মাস্ক লাগান তখন কিম তার মাস্কটি খুলে ফেলেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে উত্তর কোরিয়া সর্বপ্রথম তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এছাড়া বিদেশ থেকে কোনো খাদ্য সামগ্রী উত্তর কোরিয়ায় ঢোকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ফলে দেশটি খাদ্য ঘাটতিতে পড়ে এবং অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়।
সূত্র : বিবিসি